সারাংশ লিখন / বাংলা-সারাংশ-লিখন
![]() |
সারাংশ লিখন Saransa Likhon |
সারাংশ লেখার নিয়ম
সারাংশ-লিখন-কাকে-বলে?
গদ্যাংশ বা পদ্যাংশের মূল বক্তব্যকে সংক্ষিপ্ত আকারে সহজ এবং সরল ভাষায় উপস্থাপনা করার রীতিকে বলে সারাংশ। সাহিত্যজগতে কিংবা আমাদের বাস্তব জীবনের ক্ষেত্রে সারাংশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। নির্দিষ্ট রচনা অংশের মধ্যে একটা ভাব থাকে যা প্রচ্ছন্ন অবস্থায় থাকে। সারাংশ লেখার সময় সেই প্রচ্ছন্ন ভাব প্রকাশ পায়। সাহিত্যের প্রাঙ্গণে সারাংশ লিখন হল সৌন্দর্য বিকাশের মহৎ প্রয়াস। সারাংশ লেখার সময় কিছু নিয়ম-নীতি অনুরণ করা প্রয়োজন:
সারাংশ-লেখার-পদ্ধতি
1. গদ্যাংশ বা পদ্যাংশটিকে বার বার পড়তে হবে এবং তার অন্তর্নিহিত ভাব সম্বন্ধে একটি স্বচ্ছ ধারণা তৈরি করতে হবে।
2. প্রশ্নে উদ্ধৃত গদ্যাংশে বা পদ্যাংশে বিভিন্ন অলংকার উপমা উদ্ধৃতি বা দীর্ঘ বর্ণনা থাকতে পারে। সারাংশ লেখার সময় এগুলিকে বর্জন করতে হবে। শুধুমাত্র মূল বক্তব্য গ্রহণ করতে হবে।
3. মূল রচনায় যদি কোন উক্তি প্রত্যুক্তি থাকে বা লেখক এর বক্তব্য উত্তম পুরুষে থাকে, সেটিকে বর্জন করতে হবে। সারাংশ লেখার সময় প্রত্যক্ষ উক্তির ব্যবহার করা চলবে না।
4. সারাংশের আয়তন মূল রচনার এক-তৃতীয়াংশ হতে হবে।
5. মূল বক্তব্যের বাইরে অন্য কোন বক্তব্যের উপস্থাপনা করা চলবে না।
6. বিষয়বস্তুর সঙ্গে সংগতিপূর্ণ একটি শিরোনাম ব্যবহার করতে হবে।
7. সারাংশ লেখার সময় ছাত্র-ছাত্রী নিজের মতামত প্রকাশ করবে না।
8. মূল রচনাটি সাধু ভাষা বা চলিত ভাষা যে কোন ভাষায় লেখা থাকতে পারে। সারাংশ লেখার সময় শিক্ষার্থী যেকোনো একটি রীতি অনুসরণ করবে।
9. সবসময় মনে রাখতে হবে, সারাংশ হল একটি ভাষা ও সাহিত্যের একটি বিশেষ শিল্প সমন্বিত কর্মকুশলতা। সারাংশটি যাতে রসোত্তীর্ণ হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
উল্লিখিত বিষয়গুলির মনে রেখে তোমরা সারাংশ রচনা করবে। এখানে একটি অনুচ্ছেদ উল্লেখ করছি এবং তার সারাংশ কেমন হবে তা দেখাচ্ছি।
মূল অনুচ্ছেদ:
পৃথিবী আমাদের যে অন্ন দিয়ে থাকে সেটা শুধু পেট ভরাবার নয়, সেটাতে আমাদের চোখ জুড়োয়, আমাদের মন ভোলে। আকাশ থেকে আকাশে সূর্যকিরণের যে স্বর্ণরাগ, দিগন্ত থেকে দিগন্তে পাকা ফসল ক্ষেতে তারই সঙ্গে সুর মেলে এমন সোনার রাগিনী। সেই রূপ দেখে মানুষ কেবল ভোজনের কথাই ভাবে না, সে উৎসবের আয়োজন করে, সে দেখতে পায় লক্ষীকে যিনি একই কালে সুন্দরী এবং কল্যাণী। ধরণীর ধন-ভান্ডারে কেবল যে আমাদের ক্ষুধা নিবৃত্তির আশা তা নয়, সেখানে আছে সৌন্দর্যের অমৃত। গাছের ফল আমাদেরকে ডাক দেয় শুধু পুষ্টিকর শস্যপিণ্ড দিয়ে নয়, রূপ রস বর্ণ গন্ধ দিয়ে। ছিনিয়ে নেবার হিংস্রতার ডাক এতে নেই, এতে আছে একত্র নিমন্ত্রণের সৌহার্দের ডাক।
সারাংশ:
আত্মোপলব্ধিতে প্রকৃতির দান
প্রকৃতির অফুরান প্রদান সামগ্রী আমাদের বিরাট উদর পূর্ণ করে ক্ষান্ত হয় না। আমাদের মনে প্রশান্তি নিয়ে আসে। পৃথিবীর রূপ রস বর্ণ গন্ধ আমাদের ইন্দ্রিয়কে উজ্জীবিত করে। তাই প্রকৃতির কাছে আমাদের অর্জিত জ্ঞানে হীনতা নেই, মহৎ আত্মসমর্পন আছে।
See on Youtube:
।।সমাপ্ত।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam links in the comment box.