নিরুদ্দেশ Niruddesh by Premendra Mitra
![]() |
Nituddesh by Premendra Mitra |
Niruddesh Question- Answer: Class 9th
প্রশ্ন: ‘নিরুদ্দেশ’ গল্পের নামকরণ বিচার করো।
প্রেমেন্দ্র মিত্রের লেখা ‘নিরুদ্দেশ’ গল্পটি বাংলা সাহিত্যে এক সুন্দর সংযোজন। এই গল্পের বর্ণনা কৌশলে এক আশ্চর্য সাহিত্য রূপ দেখতে পাই। এটি যেন এক গল্পের ভিতরে আরও একটি গল্প। মূল গল্পের প্রধান চরিত্র শোভন। সদ্য তরুণ শোভন অন্যদের থেকে আলাদা। তার উচ্ছৃঙ্খল আচরণে বিরক্ত হয়ে বাবা তাকে শাসন করায় সে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। এরপর, একবার কিছুক্ষণের জন্য বাড়ি ফেরা আর দীর্ঘ দিনের জন্য বাবা-মায়ের কাছে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া। খবরের কাগজের পাতায় তার বাবা-মা অনেক চোখের জল ঝরিয়েছিল। শোভন তা দেখেও দেখেনি। এ যেন জীবন নিয়ে লুকোচুরি খেলা।
যখন ফিরে এলো তার বাবা-মায়ের কাছে, বাবা ও অন্যান্য পরিচিত মানুষগুলো তাকে চিনতে পারলেন না। তাঁদের কাছে শোভন আজ মৃত। নিজের পরিচয় শোভন কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠিত করতে পারল না। অবশেষে অর্থের বিনিময়ে তার নিজের মায়ের কাছে ছেলের অভিনয় করার অনুরোধ করলেন তার বাবা। অভিনয় করেছিল কিনা গল্পে তার উল্লেখ নেই। তবে বুঝতে অসুবিধা হয় না, শোভন জীবন-বৃক্ষ থেকে ঝরে যাওয়া একটি ফুল মাত্র। নিরুদ্দেশ হওয়ার বাসনা নিয়ে অনেকদিন তার বাবা-মাকে জব্দ করতে চেয়েছিল। আজ বেঁচে থেকেও শোভন সকলের কাছে মৃত। পৃথিবীতে এত লোকের মধ্যে থেকেও নিঃসঙ্গ ও নিরুদ্দেশ হয়ে গেল। তাই ‘নিরুদ্দেশ’ এই নামটি গল্পটিকে অন্য তাৎপর্য দিয়েছে।
প্রশ্নঃ “সেই জন্যই গল্প বানানো সহজ হলো”- গল্পটি কী ছিল ? গল্পটি বানানো সহজ হয়েছিল কেন ?
প্রেমেন্দ্র মিত্র ‘নিরুদ্দেশ’ গল্পে শোভন নামে এক তরুণ বেঁচে থেকেও কিভাবে সকলের কাছে মৃত হয়ে গেল সেই গল্প শুনিয়েছেন।
মূল গল্পটির বক্তা সোমেশ। শোভন ছিল উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির এক তরুণ। বাড়িতে সর্বদা মায়ের কাছে থেকে অতি আদর পেয়ে থাকতো সে। কিন্তু, তার বাবা তার এই উৎশৃঙ্খল জীবনকে প্রশ্রয় দেননি। একদিন রাতে ছেলে শোভনকে বকাঝকা করে বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার কথা বললেন তার বাবা। এটা হয়তো তার রাগের কথা, সত্যিই সে চলে যাক, এমনটি চাননি। কিন্তু, শোভন সেই কথার গুরুত্ব না বুঝে জেদের বসে সত্যি বাড়ি ছেড়েছিল। অনুশোচনাগ্রস্ত পিতা ও ক্রন্দনশীলা মায়ের চোখের জল খবরের কাগজের পাতায় বিজ্ঞাপনের আকারে প্রতিদিন প্রকাশিত হয়েছিল। তাঁরা প্রতিদিন শোভনকে বাড়ি ফেরার কাতর মিনতি জানিয়ে নিরুদ্দেশের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেছিলেন। বিজ্ঞাপনগুলি চোখে পড়লেও বাড়ি ফেরার কোনো উৎসাহ তার ছিল না। এরপর বিজ্ঞাপন যখন বন্ধ হল, বাড়ি ফিরল। বাড়ির মানুষজন ও অন্য সবকিছু একইরকম থাকলেও বাড়ির হৃদয়টি বদলে গিয়েছিল। নায়েব মশাই ও অন্য কর্মচারীরা শোভনকে চিনতে পারলেন না এবং তাকে প্রতারক মনে করলেন। তার বাবা পর্যন্ত তাকে চিনতে ভুল করলেন। শোভন নিজের সম্বন্ধে সত্য কথা বলার নানা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিল। এই ছিল মূল গল্পটি।
গল্পের প্রধান চরিত্র শোভনের কানের কাছে একটা জড়ুল ছিল। সেটা ছিল তাকে চিহ্নিত করার একটা শারীরিক নিদর্শন। গল্পটি বলতে বলতে যখন শেষ করলেন, তখন শ্রোতা, অর্থাৎ লেখক দ্বিধাগ্রস্থ হলেন গল্পকথক স্বয়ং শোভন-একথা ভেবে। সোমেশ তাঁর এই সন্দেহের অবসান ঘটাননি, বরং রহস্য বজায় রেখে বলেছেন জরুলটির জন্য গল্পটি বানানো সহজ হয়েছিল।
এই ব্লগে আপনি কি পেতে পারেন ? এই ব্লগ কাদের জন্য? How will this Blog help you? What will you get from this Blog?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam links in the comment box.