নীলধ্বজের প্রতি জনা
বীরাঙ্গনাকাব্য
মধুসূদন দত্ত
বাংলা সাহিত্য আলোচনা
![]() |
নীলধ্বজের প্রতি জনা জনার প্রতিবাদী চরিত্র সম্পর্কে আলোচনা করো । Discuss the Protesting Character of Jana. |
মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘নীলধ্বজের প্রতি জনা’ পত্রকবিতায় মাহেশ্বরী রাজ্যের রানী জনার এক অভিনব রূপ দেখতে পাই। জনা এক প্রতিবাদী নারী, স্বামীর বশ্যতা স্বীকার করে তাঁর সমস্ত কর্ম বিনা বিচারে মেনে নিতে রাজি নন তিনি। তাঁর কিশোর পুত্র প্রবীর অর্জুনের সাথে যুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন। তাই জনার মনে দুঃখের তরঙ্গ জেগেছে। তাঁর মনে দুঃখের সঙ্গে প্রতিবাদ ও প্রতিহিংসার আগুন জ্বলে উঠেছে। স্বামী নীলধ্বজকে অর্জুনের সাথে যুদ্ধে প্ররোচিত করতে চেয়েছেন।
তাঁর স্বামী নীলধ্বজ অর্জুনের সাথে মিত্রতা করেছেন জেনে তাঁর দুঃখ ও অপমান শতগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বামীকে নানাভাবে উৎসাহিত করতে গিয়ে যখন ব্যর্থ হলেন, অর্জুন এবং তার পরিবারের অন্য সকলের প্রতি বিষোদগার করলেন। এমনকি শালীনতার সীমা লংঘন করলেন।
জনা ক্ষত্রিয় নারী। কাপুরুষতা তাঁর ধর্ম নয়। অর্জুনের ছলনা ও কৌশল যুদ্ধ তিনি সহজেই বুঝতে পেরেছিলেন। তাঁর স্বামী পুত্র-শোক ভুলতে পারেন, কিন্তু তিনি তা পারেন না। বিশেষ করে ক্ষত্রিয়ধর্ম থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত হতে চান না। তিনি নারী, যুদ্ধ করতে পারবেন না। তাই প্রতিবাদের পন্থা হিসাবে আত্মবিসর্জন করতে চেয়েছেন গঙ্গার জলে। জনার অমল মাতৃত্বের সঙ্গে তাঁর প্রতিবাদী চরিত্রটিও এই কবিতায় সুন্দরভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Please do not enter any spam links in the comment box.